রাবি প্রতিনিধি: রাজশাহীতে 'সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্ট (এসইপি)'-এর আওতায় ইএসডিও কর্তৃক বাস্তবায়িত 'টেকসই ও স্বাস্থ্যকর উপায়ে বাংলাদেশের রেস্তোরাঁ এবং পথ-খাদ্য ব্যবস্থার মান উন্নয়ন ত্বরান্বিতকরণ' উপ-প্রকল্পের সমাপনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২২ নভেম্বর) বেলা ১২টায় রাজশাহী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এ সমাপনী কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সহযোগিতায় ও ইকোসোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ইএসডিও) বাস্তবায়নে রাজশাহী ও বগুড়া অঞ্চলের বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট, পথ খাদ্য ব্যবসায়ী, হোটেল মালিক, বাবুর্চিসহ ৬৫০ জনকে এ প্রজেক্টের আওতায় এনে আর্থিক সহায়তাসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
প্রকল্প সমাপনীতে ইএসডিও প্রজেক্টের উদ্দেশ্যগুলো সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনায় তুলে ধরেন প্রজেক্টের মনিটরিং অ্যান্ড ডকুমেন্টেশন অফিসার মো. আব্দুল মতিন। তিনি বলেন, শহরবাসীর জন্য নিরাপদ পথখাদ্য নিশ্চিত করা, পরিবেশ দূষণ, পেশাগত ঝুঁকি এবং পথখাদ্য বিক্রেতাদের জীবিকার ঝুঁকি হ্রাস করা এবং খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদেরকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান সরবরাহ করাই ছিল আমাদের এ উপ-প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।
স্ট্রিট ফুড ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ও প্রশিক্ষণার্থী শেখ আব্দুল মারুফ বলেন, "স্বাস্থ্যসম্মত খাবার তৈরির ব্যাপারে আমাদের খুব বেশি জ্ঞান ছিল না। স্ট্রিট ফুড প্রকল্পের প্রশিক্ষণ-এর মাধ্যমে আমরা অনেক জ্ঞান অর্জন করছি এবং তা আমরা বাস্তবে প্রয়োগ করছি। ইএসডিওর এই প্রজেক্টের মাধ্যমে অনেক উপকৃত হয়েছি, এ ধরণের প্রাকটিক্যাল ট্রেইনিং খুবই কার্যকর আমাদের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের জন্য।"
রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কল্যাণ চৌধুরীর সঞ্চালনায় রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, নিরাপদ পথখাদ্য ব্যবস্থা উন্নতির জন্য ইএসডিও পথ দেখাতে শুরু করেছে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ। রেস্তোরাঁ ও পথখাদ্য বিক্রেতারাও যদি এ বিষয়ে সচেতন হোন তাহলেই এ বিষয়টি বাস্তবায়ন করা সম্ভব। কারণ জোর করে এগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি আমরা যারা গ্রাহক বা ক্রেতা আছি তাদেরও সচেতন হতে হবে। যেসব বিক্রেতারা হাতে গ্লাভস ও মাথায় নেট পরে খাদ্য প্রস্তুত করে শুধুমাত্র তাদের খাদ্যই যদি আমরা গ্রহণ করি এবং অন্যদের খাদ্য পরিহার করি তাহলে সকল বিক্রেতারা বিক্রির প্রয়োজনে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য তৈরি করতে বাধ্য হবে।
কর্মশালার উদ্দেশ্য বিষয়ে জানতে চাইলে প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. লিটন বলেন, শহরবাসীর জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা, উদ্যোক্তাদের পেশাগত ঝুঁকি হ্রাস করা এবং উদ্যোক্তাদেরকে প্রযুক্তিগত জ্ঞান দান করে পথখাদ্য ব্যবসাটিকে আরও ত্বরান্বিত করার উদ্দেশ্যে আমরা যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছি সেটির ফলাফল, সাফল্য ও সম্ভাবনা গুলো আমাদের অংশীজনদেরকে অবহিত করাই মুলত আজকের এই কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল। ভবিষ্যতেও আমরা এ ধরনের কাজের মাধ্যমে দেশ ও দশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আশা করি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও সিনিয়র সহকারী সচিব মাহামুদা পারভীন, রাজশাহীর নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা মো. শাকিল আহমেদ, সমাজ সেবা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. বায়েজিদ হোসেন ওয়ারেছী, রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কমিউনিটি উন্নয়ন কর্মকর্তা আজিজুর রহমান, রাজশাহীর সিএম, বিএসটিআই-এর সহকারী পরিচালক দেবব্রত বিশ্বাস, এনজিও প্রতিনিধি এবং এসইপি উপ-প্রকল্পের মোট আট জন মডেল উদ্যোক্তা।
ইএসডিও’র পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ইএসডিও-মাইক্রো ফিন্যান্স প্রোগ্রামের রিজিউন-০২-এর প্রধান মো. এনামুল হক, ইএসডিও-স্ট্রিট ফুড প্রজেক্টের ফোকাল পারসন মো. তাসভীর আহমদ খাঁন, রাজশাহীর জোনাল ম্যানেজার মো. ওমর ফারুক, ইএসডিও-আউট অব স্কুল চিলড্রেন এডুকেশন প্রোগ্রামের জেলা ম্যানেজার মো. মহিদুল হাসানসহ ইএসডিও ষ্ট্রীট ফুড প্রকল্পের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ।